দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে জ্বালানি তেল অপরিহার্য পণ্য। ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত) পরিশোধনের মাধ্যমে প্রাপ্ত জ্বালানি তেলের প্রায় ২৬% ডিজেল, ৮% অকটেন ও পেট্রোল, ২১% কেরোসিন, ২৪% ফার্নেস অয়েল, ১% জেবিও এবং ২০% অন্যান্য জ্বালানি তেল ও উপজাত হিসেবে পাওয়া যায়। দেশে জ্বালানি তেলের ৫৪.৪৫% যোগাযোগ, ২২.৫৭% কৃষি, ১৫.০২% বিদ্যুৎ উৎপাদন, ০.০৫% গৃহস্থালি ও ০.৩৫% অন্যান্য এবং ৭.৫৫% শিল্পখাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। যমুনা অয়েল কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃক বাজারজাতকৃত পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের প্রাথমিক ধারণা নিন্মে সন্নিবেশিত করা হলোঃ
অকটেন : এইচওবিসি বা হাই-অকটেন ব্র্যান্ডিং কম্পোনেন্ট আমাদের দেশে অকটেন হিসেবে পরিচিত। অকটেন পেট্রোলিয়াম ন্যাপথা গ্রুপের প্রোডাক্ট। অকটেন নম্বর ৯৫ হলে তা অকটেন (এইচওবিসি) হিসেবে বাজারজাত করা হয়। কার, মাইক্রোবাস, জিপ অকটেন ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পেট্রোল : এমএস বা মোটর স্পিরিট আমাদের দেশে পেট্রোল হিসেবে পরিচিত। পেট্রোল পেট্রোলিয়াম ন্যাপথা গ্রুপের প্রোডাক্ট। অকটেন নম্বরেরভিত্তিতে ৮০ অকটেনকে পেট্রোল হিসেবে বাজারজাত করা হয়। বিশেষত হালকা যানবাহন যেমন- মোটরসাইকেল, কার, মাইক্রোবাস, বেবিটেক্সিতে পেট্রোল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কেরোসিন : এসকেও বা সুপিরিয়র কেরোসিন অয়েল আমাদের দেশে কেরোসিন হিসেবে পরিচিত। কেরোসিন সাধারণত বাতি জ্বালানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। সলতেওয়ালা লন্ঠন বা প্রদীপে কেরোসিন ভর্তি করে আগুন জ্বালিয়ে অনেকক্ষণ পর্যন্ত আলো পাওয়া যায় বলে ঘরবাড়ি, নৌ-যান ইত্যাদিতে এর ব্যবহার রয়েছে। গ্রামেগঞ্জে রাতে আলোর জন্য হারিকেন, কুপি, এমন কি চুলায় রান্নার কাজেও কেরোসিনের ব্যবহার হয়। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ-এর উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় কেরোসিনের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।
ডিজেল : এইচএসডি বা হাইস্পিড ডিজেল আমাদের দেশে ডিজেল হিসেবে পরিচিত। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্টের মধ্যে এইচএসডি বা ডিজেলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশী। বিদ্যুৎ উৎপাদনের মেশিনারি, নৌ ও স্থল পথে চলাচলকারী যানবাহন যেমন- লঞ্চ, জাহাজ, রেলগাড়ি, ট্রাক, বাস এবং সেচের ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যাপক ব্যবহার হয়।
ফার্নেস অয়েল : এইচএসএফও বা হাই-সালফার ফার্নেস অয়েল আমাদের দেশে কালো তেল হিসেবে পরিচিত। প্রধানত ছোট/বড় শিল্পকারখানায় চুল্লি, বিদ্যুৎকেন্দ্রের বয়লার এবং সমুদ্রগামী জাহাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ধানের তুষের সাথে ফার্নেস অয়েল মিশিয়ে চাপের মাধ্যমে বাঁশের মত লাঠি তৈরি করে তা গৃহস্থলির কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এফও ব্যবহার সবচেয়ে বেশি।
জেবিও : জেবিও বা জুট ব্যাচিং অয়েল জ্বালানি তেল হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। জেবিও পাট শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এটি পাটের আঁশকে মসৃণ, নরম, সংঘবদ্ধ করে সুতা ও কার্পেট তৈরি করতে সহায়তা করে।